অনেকেই নিজের ওজন নিয়ে অত্যন্ত মানসিক বিষণ্নতায় ভোগেন।। বয়স অনুযায়ী এবং উচ্চতা অনুযায়ী ওজন মানানসই না হলে , অনেকের মাঝেই তীব্র বিষন্নতা দেখা যায়।। বন্ধুমহলে হাসির পাত্র হয়ে ওঠে।।
তাই, আজকে এই বিষয় নিয়ে আলোচনা করব, কিভাবে ব্যালেন্সড উপায়ে ওজন বাড়াবেন❤️।।
✓সবার প্রথমে আসি এক্সারসাইজ সম্পর্কে।।
অনেকেই আপনারা বলতে পারেন, এক্সারসাইজ করলে ওজন কমে।। তাই দেখা যায় যাদের ওজন কম স্বাভাবিকভাবেই শারীরিক পরিশ্রম বা এক্সারসাইজ থেকে দূরে থাকার চেষ্টা করেন।।
এক্সারসাইজ এমনই একটি জিনিস, যা শরীর-মন উভয়কে ভালো রাখে।। প্রত্যহ সকালের এক্সারসাইজ , ওজন বাড়ানোর প্রথম ওষুধ হিসেবে কাজ করে।। দেহের কোনায় কোনায় রক্ত সঞ্চালন বাড়ায়।।
কি ধরনের এক্সারসাইজ করবেন??
প্রথমেই জিমে গিয়ে ভারী ভারী যন্ত্রপাতি নিয়ে এক্সারসাইজ শুরু করে দিবেন??
সোজা উত্তরঃ না।
আপনি জিমে যাবেন অবশ্যই, প্রথমেই চেষ্টা করুন শরীরকে ফ্লেক্সিবল করার।। সে ক্ষেত্রে জিমের ইন্সট্রাক্টর এর কাছে ফ্রি হ্যান্ড এক্সারসাইজ গুলো শিখে নিন।। নিজের দেহের ওজন দিয়ে, এক্সারসাইজ করুন।। জিমে যেতে না পারলে, ইউটিউবে হাজার হাজার ফ্রি-হ্যান্ড এক্সারসাইজ এর ভিডিও আছে।। সেগুলো দেখুন এবং প্রতিদিন রুটিন করে শুরু করুন।। এরপর দেখুন ম্যাজিক।। তবে প্রথম দুইদিন শরির ব্যথা হতে পারে।। ব্যথা শরীর নিয়ে এক্সারসাইজ চালিয়ে যেতে হবে।।
✓এবার আসি খাবারের মেনু এবং খাওয়ার নিয়ম
১. ধরুন ২৫০০ ক্যালরি প্রতিদিন ক্ষয় হয়, তার চেয়ে ৫০০–৭০০ ক্যালরি খাবার বেশি খেয়ে শুরু করুন। ভাত, মাছ–মাংস, ডাল, বীজ, শাকসবজি, ফলমূল, ডিম, দুগ্ধজাতীয় খাবার নিয়মিত খেতে হবে।
২. ওজন বাড়ানোর জন্য অবশ্যই খাদ্যতালিকায় উচ্চ ক্যালরিযুক্ত খাবার রাখতে হবে। এ ধরনের কিছু খাবার হলো কাঠবাদাম, কাজুবাদাম, আখরোট, পেস্তাবাদাম, চিনাবাদাম, খেজুর, কিসমিস, ননিযুক্ত দুধ, ফুলক্রিম দই, পনির, ক্রিম, মুরগির মাংস, গরুর মাংস, ভেড়ার মাংস, ছাগলের মাংস ও কলিজা, আলু, মিষ্টি আলু, চকলেট, কলা, মাখন ইত্যাদি।
৩. দিনে পাঁচ–ছয়বার ইন্টারভেল করে খাবার গ্রহণ করুন।। যাঁদের ওজন কম, তাঁদের তিন–চার ঘণ্টা পরপর খাবার খেতে হবে। দীর্ঘসময় পেট খালি রাখা যাবেনা। পুষ্টিকর উচ্চ ক্যালরির খাবার যদি বারবার গ্রহণ করা হয় এবং প্রতিদিনের ক্যালরির চাহিদা যদি পূরণ করা যায়, সে ক্ষেত্রে দ্রুতই ওজন বাড়ানো সম্ভব।
৪. যাদের ওজন কম, তাঁদের অবশ্যই মোট ক্যালরির শতকরা ৫০-৬০ ভাগ শর্করা গ্রহণ করতে হবে। দিনে তিনবার প্রধান খাবার হিসেবে শর্করা গ্রহণ করতে হবে। এ ধরনের খাবারের মধ্যে আলু, আটা, চাল, পাস্তা অন্যতম।
৫. ওজন বাড়াতে আমিষযুক্ত খাবার খাওয়া জরুরি।ডিম, দুধ, মাছ, মাংস, ডাল, বীজজাতীয় খাবার আমিষের ভালো উৎস। তবে সবার প্রতি শ্রদ্ধা রেখে বলছি, আমিষ যুক্ত খাবার অনেক সময় অনেক দামী হয়ে থাকে , নিত্য প্রয়োজনীয় খাদ্য দ্রব্য যাদের হাতের নাগালের বাইরে, তাদের জন্য চিন্তার কোন কারণ নেই।। বিভিন্ন ধরনের ডাল , প্রায় অনেকটাই সব ধরনের অ্যামাইনো এসিড (আমিষের ক্ষুদ্র একক) কাভার করে ফেলে।।
✓অনেক কথা হল।। এবার আসি কিছু লাইফ স্টাইল মডিফিকেশনে
১. প্রথমেই ধূমপান, সম্পূর্ণভাবে ত্যাগ করতে হবে।। বিভিন্ন রোগের উৎস হিসেবে পরিচিত ধূমপান, দেহের স্বাভাবিক কার্যক্রম কে অনেকাংশেই ব্যাহত করবে।।
২. ঘুম। ওজন বাড়ানোর জন্য একটি বড় ফ্যাক্টর।। প্রতিদিন পর্যাপ্ত পরিমাণ ঘুম , ব্যালেন্সড ভাবে ওজন বাড়ানোর জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।। চেষ্টা করুন তাড়াতাড়ি বিছানায় চলে যাওয়ার।। ৮ ঘন্টা বিশ্রাম একজন সুস্থ স্বাভাবিক মানুষের জন্য অত্যন্ত প্রয়োজনীয়।।
৩. সর্বোপরি দুশ্চিন্তা মুক্ত থাকুন। অ্যাক্টিভ হন।। জীবন একটাই।। এটিকে যথাসাধ্য টেনশন মুক্ত রাখুন।।
৪. জীবনের সমস্ত কাজকে গুছিয়ে আনুন।। সকালে ঘুম থেকে উঠে একটি রুটিন করে ফেলুন।। রুটিনমাফিক চলাফেরা করুন রুটিনমাফিক খাওয়া-দাওয়া করুন।। সাফল্য আসবেই।।